বাইবেলে হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) সম্পর্কে ভবিষ্যৎ বাণী
বাইবেলে হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)সম্পর্কে ঈসা (আঃ) এবং মূসা (আঃ) এর বিস্ময়কর ভবিষ্যৎ বাণী সম্পর্কে বিস্ময়কর ভবিষ্যৎবানী
যুগে যুগে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা অসংখ্য নবী রাসুল প্রেরণ করেছেন মানব জাতির হেদায়েতের জন্য। তারই ধারাবাহিকতাই সর্বশেষ নবী হিসেবে হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)কে সমস্ত মানবজাতির মুক্তির দিশারি হিসেবে প্রেরণ করেন। তবে বর্তমান ইহুদি-খৃষ্টান জাতি মুহাম্মদ (সাঃ) কে শেষ নবী হিসেবে স্বকৃতি দেয় না। অবাক করা বিষয় হলো, মুহাম্মদ (সাঃ) কে নবী হিসেবে স্বকৃতি দিতে যাদের নানান তালবাহানা তাদের ধর্মগ্রন্থেই কিনা বিশ্ব নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) সম্পর্কে ভবিষ্যৎ বাণী করা আছে।
এই আর্টিকেলে হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) সম্পর্কে বাইবেলে ইসা (আঃ) ও মূসা (আঃ) এর বিস্ময়কর ভবিষ্যৎ বাণী সম্পর্কে জানবো।
বাইবেলের বুক অব ডিওটোরনমি বা দ্বিতীয় বিবরণী ৩৩ নং অধ্যায়ে উল্লেখ আছে, মূসা (আঃ) তার মৃত্যুর কিছুদিন পূর্বে বনি ইসরাইলের লোকদের ডেকে আর্শীবাদ করে বলেন, প্রভু সিনাই পর্বত বা তূর পর্বত থেকে এসেছেন। এবং সেয়ীর পর্বতের উপর গৌধূলি বেলায় উধিত হলেন। এবং পারাণ পর্বত থেকে জ্বল জ্বল করে আলো জ্বলে উঠলো। প্রভু তার ১০ হাজার পবিত্র জনকে সঙ্গে নিয়ে এলেন। তার ডান হাতে ছিলো জ্বলন্ত আইন।
1ত্যুর পূর্বে ঈশ্বরের লোক মোশি, ইস্রায়েলের লোকদের এই সব বলে আশীর্বাদ করলেন|
2 “প্রভু সীনয় পর্বত হতে এলেন, সেযীরের গোধুলি বেলায় য়েন আলো উদিত হল| পারণ পর্বত হতে য়েন আলো জ্বলে উঠলো| প্রভু তাঁর 10,000 পবিত্র জনকে তাঁর সঙ্গে নিয়ে এলেন| ঈশ্বরের পরাক্রমী সৈন্যরা তাঁর পাশে ছিল|
3 হ্যাঁ, প্রভু তাঁর লোকদের ভালবাসেন| সমস্ত পবিত্র লোকরা তাঁর হাতে রয়েছে| তারা তাঁর চরণতলে বসে তাঁর শিক্ষাসকল শেখে! [1]
বাইবেলের এই আয়াত সমূহে তিনটি পর্বতের কথা উল্লেখ আছে। প্রথমটি সিনাই পর্বত বা তূর পর্বত, দ্বিতীয়টি সেয়ীর পর্বত, তৃতীয়টি পারাণ পর্বত।
একই সাথে এখানে তিনটি নবুয়তের কথা উল্লেখ আছে। প্রথমটি, প্রভু সীনয় পর্বত হতে আসলেন। অর্থাৎ মূসা (আঃ)কে সিনায় পর্বতে ওহি দান করা হয়েছে।
দ্বিতীয়টি, প্রভু সেয়ীর পর্বত হতে উদিত হলেন। সেয়ীর পর্বত ফিলিস্তিনের একটি পাহাড়। এই শহরেই ঈসা (আঃ) জন্মগ্রহণ করেন এবং নবুয়ত লাভ করেন।
তৃতীয়টি, পারাণ পর্বত, যেখানে প্রভু আলোকিত হয়ে উঠলেন।
পারাণ পর্বত কোথায় অবস্থিত? এর উত্তরের জন্য আমাদের যেতে হবে আদিপুস্তক অধ্যায় নং ২১, আয়াত নং ২১।
তার মা এক মিশরীয় কন্যার সঙ্গে তার বিয়ে দিল| তারা [ইসমাইল (আঃ) ও মা হাজেরা ] সেই পারণ নামের মরুভূমিতেই বাস করতে লাগল| [2]
এই আয়াতে পরিষ্কারভাবেই বলা হয়েছে ইসমাইল (আঃ) যে স্থানে বাস করতেন সেই স্থানের নাম পারাণ। পারাণ অবস্থিত মক্কায়।
ইসমাইল (আঃ) ছিলেন কেদার বা আরবের পিতা। এই বিষয়ে বাইবেলেও উল্লেখ আছে।
13আরব সম্বন্ধে দুঃখের বার্তা:দদান থেকে এক দল ব্যবসাযী তাদের ব্যবসার জিনিসপত্র পশুর টানা গাড়িতে (ক্য়ারাভান) চাপিয়ে নিয়ে আসছে| আরবের মরুভূমিতে কিছু গাছের কাছে তারা রাত কাটাল|
14 তারা কিছু তৃষ্ণার্ত ভ্রমণকারীদের জল পান করালো| টেমার লোকরা ঐ ভ্রমণকারীদের খাদ্যও দিল|
15 ঐসব লোক তরবারির নাগাল এড়িয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে| তীরের আওতা থেকে তারা পালিয়ে বেড়াচ্ছে| বিধ্বংসী যুদ্ধের হাত থেকে বাঁচতে তারা পালিয়ে যাচ্ছিল|
16 সদাপ্রভু আমায় বলেছিলেন যে এই সব ঘটবে| প্রভু বলেছিলেন, “এক বছরের মধ্যেই, যে ভাবে একজন ভাড়াটে সহকারী সময় গোনে, কেদরের সমস্ত গৌরব অদৃশ্য হয়ে যাবে|
17 সে সময় শুধু কয়েকজন তীরন্দাজ, কেদরের মহান সৈন্যরা বেঁচে থাকবে|” কারণ প্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বর বলেছেন! [3]
এই আয়াতগুলোতে বলা হচ্ছে,আরবদের জন্য ভবিষ্যৎবানী দিদান থেকে একটি কাফেলা তাদের ব্যবাসার জিনিসপত্র পশুর গাড়িতে করে নিয়ে এসেছে যারা আরবের মরুভূমিতে রাত কাটালো। টেমার (মদিনা) লোকেরা তাদের পানি ও খাবার দিয়েছে। এই লোকগুলো তরবারির নাগাল থেকে পালিয়ে বেরাচ্ছে, যা হত্যার জন্য তৌরি! তীর থেকে পালিয়ে বেরাচ্ছে, যা ছোঁড়ার জন্য তৌরি! যুদ্ধের ধ্বংস হতে বাঁচতে তারা পালিয়ে বেড়াচ্ছে। প্রভু ঈসাকে বললেন এমনটাই হবে।
এক বছরের মধ্যেই, যেভাবে ভাড়াটে সহকারী সময় গোনে, কেদরের (কুরাইশদের) সমস্ত গৌরব অদৃশ্য হয়ে যাবে। অর্থাৎ ইসমাইল (আঃ) এর পুত্র কেদারের জন্য দূর্দিন অপেক্ষা করছে।
এই আয়াতগুলো থেকে স্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে যে কেদার’রা আরবেই বসবাস করে। আর কেদার হলো ঈসমাইল (আঃ) এর দ্বিতীয় পুত্র। সুতরাং কেদার যদি আরবের হয় তাহলে ইসমাইল (আঃ)ও আরবের।
এছাড়া টেইমা (মদিনা) এখনো আরবের উত্তর সৌদি আরবের একটি শহর। [4]
তাহলে এখন প্রশ্ন হচ্ছে আরবের পারাণ পর্বত থেকে কে এসেছে ১০ হাজার মানুষ নিয়ে? এবং যার হাতে ছিলো জ্বলন্ত বিধান।
হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) যখন মক্কা বিজয় করেছিলো তখন মুহাম্মদ (সাঃ) এর সাথে ১০ হাজার সাহাবি ছিলো। এবং মুহাম্মদ (সাঃ) এর সাথে কুরআন ছিলো, যেটা জ্বলন্ত বিধান।
অর্থাৎ বুক অব ডিওটোরনমির এই ভবিষ্যৎবানী অক্ষরে অক্ষরে মিলে পূর্ণ হয়েছে।
খ্রিষ্টানরা দাবী করে থাকেন যে এখানে ঈসা (আঃ) এর কথা বলা হয়ছে, মুহাম্মদ (সাঃ) এর কথা নয়। তবে খ্রিষ্টানদের এই দাবী সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং বিভ্রান্তিমূলক। কারণ, ঈসা (আঃ) এর সাথে ইসমাইল (আঃ) এর পূত্র কেদার, কেদারের বংশধর, টেইমা অঞ্চল, পারাণ অঞ্চলের কোনো সম্পর্ক নেই।
এবং বুক অব ইসাইয়ার উক্ত আয়াত সমূহে উল্লেখিত আছে, একটি কাফেলা তাদের ব্যবাসার জিনিসপত্র পশুর গাড়িতে করে পালিয়ে এসেছে যারা আরবের মরুভূমিতে রাত কাটালো। টেমার লোকেরা তাদের পানি ও খাবার দিয়েছে। এক বছরের মধ্যেই, যেভাবে ভাড়াটে সহকারী সময় গোনে, কেদরের সমস্ত গৌরব অদৃশ্য হয়ে যাবে।
প্রশ্ন হচ্ছে কবে কদারের সমস্ত গৌরব অহংকার অদৃশ্য হয়ে গিয়ছে, ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল ?
হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) ১৩বছর পারাণ বা মক্কায় দাওয়াত দিয়েছিল। তার পর তিনি মদিনা বা টেইমাতে হিযরত করেছেন। মদিনার লোকেরা মুহাম্মদ (সাঃ)কে আশ্রয় দিয়েছিল।
হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর মদিনা হিযরতের ১-১.৫ বছরের মধ্যেই বদরের যুদ্ধ সংগঠিত হয়। সেই যুদ্ধে কুরাশদের বা কেদারের সকল গৌরব, সকল অহংকার ধ্বংস করে দেওয়া হয়। কুরাইশদের প্রথম সাড়ির সকল নেতাদের ধ্বংস করে দেওয়া হয়।
যোহন অর্ধ্যায় ১৬ তে উল্লেখিত আছে যে,
7 কিন্তু আমি তোমাদের সত্যি বলছি; আমার যাওযা তোমাদের পক্ষে ভাল, কারণ আমি যদি না যাই তাহলে সেই সাহায্যকারী তোমাদের কাছে আসবেন না৷ কিন্তু আমি যদি যাই তাহলে আমি তাঁকে তোমাদের কাছে পাঠিয়ে দেব৷
8 যখন সেই সাহায্যকারী আসবেন তখন তিনি পাপ, ন্যায়পরায়ণতা ও বিচার সম্পর্কে জগতের মানুষকে চেতনা দেবেন৷
9 তিনি পাপ সম্পর্কে চেতনা দেবেন কারণ তারা আমাতে বিশ্বাস করে না৷
10 ন্যায়পরায়ণতা সম্পর্কে বোঝাবেন কারণ এখন আমি পিতার কাছে যাচ্ছি, আর তোমরা আমায় দেখতে পাবে না৷
11 বিচার সম্বন্ধে চেতনা দেবেন কারণ এই জগতের য়ে শাসক তার বিচার হয়ে গেছে৷
12 ‘তোমাদের বলবার মতো আমার এখনও অনেক কথা আছে; কিন্তু সেগুলো তোমাদের গ্রহণ করার পক্ষে এখন অতিরিক্ত হয়ে যাবে৷
13 সত্যের আত্মা যখন আসবেন, তখন তিনি সকল সত্যের মধ্যে তোমাদের পরিচালিত করবেন৷ তিনি নিজে থেকে কিছু বলেন না, কিন্তু তিনি যা শোনেন তাই বলেন, আর আগামী দিনে কি ঘটতে চলেছে তা তিনি তোমাদের কাছে বলবেন৷ [5]
উক্ত আয়াত সমূহে বলা হচ্ছে, ঈসা (আঃ) তার সাহাবীদের উদ্দেশ্যে বলেন, “ আমি তোমাদের সত্যি বলছি, আমার চলে যাওয়া তোমাদের জন্য ভালো হবে। কারণ আমি যদি না যায় তোমাদের কাছে সেই সাহায্যকারী আসবেনা। কিন্তু আমি যদি যাই, তাহলে আমি তাকে তোমাদের কাছে পাঠিয়ে দিব। সত্যের আত্মা যখন আসবেন, তখন তিনি সকল সত্যের মধ্যে তোমাদের পরিচালিত করবেন৷ তিনি নিজে থেকে কিছু বলেন না, কিন্তু তিনি যা শোনেন তাই বলেন, আর আগামী দিনে কি ঘটতে চলেছে তা তিনি তোমাদের কাছে বলবেন৷ অর্থাৎ তিনি ভবিষ্যৎবানীও করবেন। তিনি যখন আসবেন তখন সকল সত্যের মধ্যে তাদের পরিচালিত করবেন। তিনি নিজ থেকে কিছুই বলবেন না। তিনি যাই শুনেন তাই বলেন।
বাইবেল দ্বিতীয় বিবরণ অর্ধ্যায় ১৮ তেও ইস(আঃ)এর এই কথাগুলো পাওয়া যায়।
18আমি তাদের কাছে তোমার মতোই একজন ভাববাদী পাঠাব| এই ভাববাদী তাদের লোকদের মধ্যেই একজন হবে| সে য়ে কথা অবশ্যই বলবে সেটা আমি তাকে বলে দেব| আমি যা আদেশ করি তার সমস্ত কিছু সে লোকদের বলবে|
19 এই ভাববাদী আমার জন্যই বলবে এবং যখন সে কথা বলবে, যদি কোন ব্যক্তি আমার আদেশ না শোনে তাহলে আমি সেই ব্যক্তিকে শাস্তি দেব| [6]
খ্রিষ্টানদের দাবী অনুযায়ী এখানে ঈসা (আঃ) পবিত্র আত্মার কথা বলেছেন। পবিত্র আত্মা আসবেন ঈসা (আঃ) স্বর্গে আরোহণ করার পর। কিন্তু গসপেল অব জন বা যোহন অনুযায়ী পবিত্র আত্মা ইতিমধ্যে ঈসা (আঃ) এর সাথে উপস্থিত।
ইলীশাবেত্ যখন মরিয়মের সেই অভিবাদন শুনলেন, তখনই তাঁর গর্ভের সন্তানটি [ ইয়াহিয়া (আঃ) ] আনন্দে নেচে উঠল; আর ইলীশাবেত্ পবিত্র আত্মাতে পূর্ণ হলেন৷ [7]
21 এরপর যীশু আবার তাঁদের বললেন, ‘তোমাদের শান্তি হোক! পিতা য়েমন আমাকে পাঠিয়েছেন, আমিও তেমনি তোমাদের পাঠাচ্ছি৷’
22 এই বলে তিনি তাঁদের ওপর ফুঁ দিলেন, আর বললেন, ‘তোমরা পবিত্র আত্মা গ্রহণ কর৷ [8]
পরে ছেলেটির বাবা সখরিয় [ যাকারিয়া (আঃ) ] পবিত্র আত্মায় পূর্ণ হয়ে ভাববাণী বলতে লাগলেন। [9]
এই আয়াতগুলো থেকে স্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে যে পবিত্র আত্মা ইতিমধ্যে ঈসা (আঃ) এর সাথে উপস্থিত। এবং খ্রিষ্টানদের দাবী অনুযায়ী এখানে ঈসা (আঃ) পবিত্র আত্মার কথা বলেছেন, তা পুরোপুরি মিথ্যা।
প্রশ্ন হচ্ছে, তাহলে কে সে ভাববাদী বা সাহায্যকারী ? যিনি নিজে থেকে কিছু বলবেন না, কিন্তু তিনি যাই শুনবেন তাই বলবেন। এবং আগামীতে কি ঘটবে তিনি তাও বলবেন।
এই প্রশ্নের উত্তরের জন্য আমাদের যেতে পবিত্র কুরআনে।
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা পবিত্র কুরআনে ইরশাদ করেন, মুহাম্মদ (সাঃ) আল্লাহর রাসূল এবং তার সাথে যারা আছে তারা কাফিরদের প্রতি অত্যন্ত কঠোর; পরস্পরের প্রতি সদয়, তুমি তাদেরকে রুকূকারী, সিজদাকারী অবস্থায় দেখতে পাবে। তারা আল্লাহর করুণা ও সন্তুষ্টি অনুসন্ধান করছে। তাদের আলামত হচ্ছে, তাদের চেহারায় সিজদার চিহ্ন থাকে। এটাই তাওরাতে তাদের দৃষ্টান্ত। [10]
এবার ডিওটোরনমি ৩৩ অর্ধ্যায় ১-৩ ও ১৮ঃ১৮ আবার পড়ুন।
“প্রভু সীনয় পর্বত হতে এলেন, সেযীরের গোধুলি বেলায় য়েন আলো উদিত হল| পারণ পর্বত হতে য়েন আলো জ্বলে উঠলো| প্রভু তাঁর 10,000 পবিত্র জনকে তাঁর সঙ্গে নিয়ে এলেন| ঈশ্বরের পরাক্রমী সৈন্যরা তাঁর পাশে ছিল|
হ্যাঁ, প্রভু তাঁর লোকদের ভালবাসেন| সমস্ত পবিত্র লোকরা তাঁর হাতে রয়েছে| তারা তাঁর চরণতলে বসে তাঁর শিক্ষাসকল শেখে!” [1]
আমি তাদের কাছে তোমার মতোই একজন ভাববাদী পাঠাব| এই ভাববাদী তাদের লোকদের মধ্যেই একজন হবে| সে য়ে কথা অবশ্যই বলবে সেটা আমি তাকে বলে দেব| আমি যা আদেশ করি তার সমস্ত কিছু সে লোকদের বলবে| [11]
আমি তোমাদের কাছে তেমনিভাবে একজন রসূলকে তোমাদের প্রতি সাক্ষ্যদাতা হিসেবে পাঠিয়েছি (যিনি ক্বিয়ামতে সাক্ষ্য দিবেন যে, দ্বীনের দাওয়াত তিনি যথাযথভাবে মানুষের কাছে পৌঁছে দিয়েছেন) যেমনভাবে আমি ফেরাউনের কাছে পাঠিয়েছিলাম একজন রসূলকে। [12]
এই আয়াতে মক্কাবাসীদেরকে সতর্ক করা হয়েছে যে, তোমাদের পরিণামও তাই হবে, যা মূসা (আঃ)-কে মিথ্যা জানার কারণে ফিরআউনের হয়েছিল।
ডিওটোরনমি ৩৩ অর্ধ্যায় ১৮ঃ১৮তে উল্লেখ আছে যে, সে য়ে কথা অবশ্যই বলবে সেটা আমি তাকে বলে দেব| আমি যা আদেশ করি তার সমস্ত কিছু সে লোকদের বলবে|
অর্থাৎ প্রভু তাকে বিধান বা আইন দিবেন যেটা তিনি লোকদের বলবে।
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা পবিত্র কুরআনে ইরশাদ করেন,
তোমাদের সঙ্গী পথভ্রষ্ট হয়নি এবং বিপথগামীও হয়নি।
আর সে মনগড়া কথা বলে না।
তাতো কেবল ওহী, যা তার প্রতি ওহীরূপে প্রেরণ করা হয়। [13]
উক্ত আয়াত সমূহেও বলা হচ্ছে, তোমাদের সঙ্গী অর্থাৎ মুহাম্মদ (সাঃ) বিপথগামী নয় এবং তিনি মনগড়া কথা বলেন না। মুহাম্মদ (সাঃ)এর কাছে ওহী বা বিধান প্রেরণ করা হয়েছে। এবং তিনি যা বলে তা ওহী বা বিধান।
বাইবেল, মথি অর্ধ্যায় ২১ এ ঈসা (আঃ) বলেন,
42 তখন যীশু তাদের বললেন, ‘তোমরা কি শাস্ত্রের এই অংশ পড় নি:‘রাজমিস্ত্রিরা য়ে পাথরটা বাতিল করে দিয়েছিল, সেই পাথরটাই হয়ে উঠেছে কোণের প্রধান পাথর৷ এটা প্রভুরইকাজ, এটা আমাদের চোখে আশ্চর্য লাগে৷’
43 ‘অতএব, আমি তোমাদের বলছি, ঈশ্বরের রাজ্য তোমাদের কাছ থেকে নিয়ে নেওযা হবে, আর এমন লোকদের দেওয়া হবে, যাঁরা ঈশ্বরের রাজ্যের পক্ষে উপযুক্ত ব্যবহার করবে৷
44 আর ঐ য়ে পাথর তার ওপরে য়ে পড়বে সে ভেঙ্গে চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে যাবে, আর সেই পাথর যার ওপরে পড়বে তাকে গুঁড়িয়ে ধূলিসাত্ করবে৷’ [14]
বাইবেল, মথি অর্ধ্যায় ২৪ এ ঈসা (আঃ) বলেন,
34 আমি তোমাদের সত্যি বলছি, যতক্ষণ পর্যন্ত না এসব ঘটছে এই যুগের লোকদের শেষ হবে না৷
35 আকাশ ও সমগ্র পৃথিবী বিলুপ্ত হয়ে যাবে, কিন্তু আমার কোন কথা বিলুপ্ত হবে না৷
36 ‘সেই দিন ও মুহূর্ত্তের কথা কেউ জানে না, এমন কি স্বর্গদূতেরা অথবা পুত্র নিজেও তা জানেন না, কেবলমাত্র পিতা (ঈশ্বর) তা জানেন৷
37 নোহের সময় য়েমন হয়েছিল, মানবপুত্রের আগমনের সময় সেইরকম হবে৷
38 নোহের সময়ে বন্যা আসার আগে, য়ে পর্যন্ত না নোহ সেই জাহাজে ঢুকলেন, লোকেরা সমানে ভোজন পান করেছে, বিয়ে করেছে ও ছেলেমেয়েদের বিয়ে দিয়েছে৷
39 ‘য়ে পর্যন্ত না বন্যা এসে তাদের সবাইকে ভাসিয়ে নিয়ে গেল, সে পর্যন্ত তারা কিছুইবুঝতে পারে নি য়ে কি ঘটতে যাচ্ছে৷ মানবপুত্রের আগমনও ঠিক সেই রকমভাবেইহবে৷ [15]
অর্থাৎ আল্লাহর পক্ষ হতে প্রেরিত রাসুল ঈসা (আ:) কে অস্বীকার কারণে বনি ইসরাইল আল্লাহর আযাবে ধ্বংস হয়ে যাবে। এবং আল্লাহ এমন এক জাতিকে এই রাজ্য দিবেন যারা আল্লাহর রাজ্যের পক্ষে উপযুক্ত হবে। আর সেই জাতি হলো ইসমাইল (আঃ) এর বংশধর। আর সেই ভাববাদী বা সাহায্যকারী হলেন হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)।
তথ্য সূত্রঃ
1. বাইবেল; বুক অব ডিওটোরনমিঃ, ৩৩ঃ ১-৩
3.বাইবেল; বুক অব ইসাইয়া; ২১ঃ১৩-১৭
6.বাইবেল, দ্বিতীয় বিবরণ; ১৮ঃ ১৮-১৯
11.বাইবেল, দ্বিতীয় বিবরণ; ১৮ঃ ১৮
12.কুরআন, সূরা আল-মুযযাম্মিল; ৭৩ঃ১৫
13.কুরআন, সূরা আন-নাজম; ৫৩ঃ২-৪
হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) সম্পর্কিত – Faith and Theology (faith-and-theology.com)
খিষ্টান ধর্ম – Faith and Theology (faith-and-theology.com)