শূন্য থেকে মহাবিশ্ব ?
শূন্য থেকে মহাবিশ্ব ? লরেন্স ক্রসের শূন্য
প্রচলিত অর্থে শূন্য বলতে কি বোঝায় ?
শূন্য মানে যাবতীয় সবকিছুর অনুপস্থিতি। অর্থাৎ পদার্থ,শক্তি, সম্ভাব্য সকল বিষয়ের অনুপস্থিতি। অথবা শূন্য মানে কোনো কারণজনিত পরিবেশের অনুপস্থিতিকেও বোঝায়। শূন্য থেকে মহাবিশ্ব সৃষ্টি কথাটা এরকম যে মহাবিশ্ব এমনি এমনি অনস্তিত্ব থেকে অস্তিত্বে চলে এসেছে।
‘আল্লাহর অস্তিত্বের পক্ষে কুরআনের যুক্তি‘ এই আর্টিকেলে আমরা প্রমাণ করেছি কোনো কিছু এমনি এমনি অনস্তিত্ব থেকে অস্তিত্বে আসতে পারেনা। কেননা অস্তিত্বহীন কিছু থেকে কিভাবে একটা কিছু অস্তিত্বে আসতে পারে!? শূন্য থেকে কিছুই আসেনা। ০+০+০+=০ই হবে! কখনো ৩ হবেনা।
মনে করুন, * গতকাল রাতে আপনার বন্ধুর বিয়েতে খুব মজা করে কাচ্ছি খেলেন। কিন্তু সেটা কিছুই ছিল না!
* সেদিন পরিক্ষার হলে আমার পাশে কেউ বসেনি। কিন্তু তারা আমাকে কিছু প্রশ্নের উত্তর দেখিয়েছিল
* আপনাকে কোনো এক নির্জন জায়গায় অন্ধাকার ঘরে আটকে রাখা হয়েছে। দরজা-জানালা সব বন্ধ। আর নির্জন এলাকা বলে কেউ আপনার চিৎকারও শুনতে পাচ্ছেনা। আপনি বসে বসে ভাবছেন কিভাবে সেখান থেকে বের হবেন! কিন্তু কোনো ভাবেই উপায় খুঁজে পাচ্ছেন না। ভাবতে ভাবতে হঠাৎ আপনি ঘুমিয়ে পড়লেন। ঘুম থেকে উঠেই দেখলেন সেই অন্ধকার নির্জন ঘরে একটা টেবিল রাখা,তার উপর একটা ল্যাপটপ,ইন্টারনেট সংযোগ,বিদ্যুৎ সবই চলে আসছে। এটা কি কিছুতেই সম্ভব ?
উপরের তিনটি যুক্তি একজন সুস্থ বিবেকবান, র্যাশনাল মানুষ মাত্রই স্বীকার করবে এটা একেবারেই অসম্ভব এবং হাস্যকর। ‘শূন্য থেকে মহাবিশ্ব ?’ ব্যাপারটা ঠিক এরকমই অসম্ভব ও হাস্যকর !
নাস্তিকরা দাবী করতে পারে কোয়ান্টাম ভ্যাকুয়াম বা শূন্যতায় কোনো কণিকা শূন্য থেকে অস্তিত্বশীল হতে পারে। নাস্তিকদের এই দাবী করা মানে অনেকটা হিপোক্রেসি করা। কেননা, কোয়ান্টম ভ্যাকুয়াম বা শূন্যতা কোনো খালি যায়গা নয়। সেখানে পদার্থের নিয়ম চলে। কোয়ান্টম শূন্যতা হচ্ছে ক্ষণস্থায়ী শক্তির অবস্থা। আর সেই শক্তি থেকেই প্রতিনিয়ত জোড়ায় জোড়ায় তৈরি হয় কণা ও প্রতিকণা। যারা পুনরায় ধ্বংস হয়ে আবার শক্তিতে পরিণত হয়ে যায়।
সুতরাং কোয়ান্টম ভ্যাকুয়াম বা শূন্যতা মানে ভৌত কিছু। রেফারেন্সঃ আমেরিকান ফিজিকাল সোসাইটি। (১৯৯৮) ফোকাস; দা ফোর্স অভ এমপ্টি স্পেইস।
লরেন্স ক্রসের শূর্ন্য
অধ্যাপক লরেন্স ক্রস তার ” আ ইউনিভার্স ফ্রম নাথিং ” নামে বইটিতে বলেছেন ইউনিভার্স শূন্য থেকে অস্তিত্বে আসা সম্ভব। তিনি ‘শূন্য বা নাথিং’কে অস্থিতিশীল বা পূর্ব থেকে বিদ্যমান ফাঁকা জায়গা।রেফারেন্সঃ ক্রাউস এল.এম.(২০১২) ‘ আ ইউনিভার্স ফ্রম নাথিং,’ ওয়াই ইজ দেয়ার সামথিং রাদার দ্যান নাথিং। লান্ডান;সিমন অ্যান্ড শুস্টার, পৃষ্টা ১৭০
[রেফারেন্সটি হামজা জর্জিসের দ্যা ডিভাইন রিয়ালিটি বই থেকে নেওয়া হয়েছে ]
‘নাথিং বা শূন্য’ মানে সার্বিক সব কিছুর অনুপস্থিতি। তার গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, ‘শূন্য’ মানে সময়, ফাঁকা জায়গা এবং কণার অনুপস্থিতি। লরেন্স ক্রস কোয়ান্টম ভ্যাকুয়াম যে ভৌত কিছুর উপস্থিতি আছে সেটা গোপন রেখেছে।
এই টপিকে অন্যান্য আর্টিকেলঃ সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্ব – Faith and Theology (faith-and-theology.com)
4 Comments