সেক্সুয়াল সিলেকশনঃ ইন্ট্রাসেক্সুয়াল সিলেকশন
বিবর্তনবাদ
সূচনা
ন্যাচারাল সিলেকশন বা প্রাকৃতিক নির্বাচন এ আমরা সর্বদাই উপকারী বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করেছি। তবে প্রাণীদের মধ্যে বেশ কিছু অপ্রয়োজনীয় এবং প্রতিকূল ট্রেইট ও দেখা যায় যা আদোতে তাদের জন্য প্রয়োজনীয় নয় কিন্তু তবুও সেই বৈশিষ্ট্য তাদের মধ্যে বিদ্যমান। প্রাণীদের মধ্যে এমন কিছু অপ্রয়োজনীয় ( Evolutionary valueless) বৈশিষ্ট্য থাকার কারণ হচ্ছে সেক্সুয়াল সিলেকশন বা যৌন নির্বাচন।
যৌন নির্বাচন প্রধানত দু ধরনের। ১. Intrasexual selection এবং ২. Intersexual selection.
Intrasexual selection
Intrasexual selection বা অন্তঃলিঙ্গের নির্বাচনের ক্ষেত্রে একই লিঙ্গের সদস্যদের মধ্যে একাধিক পুরুষ একজন স্ত্রীর সাথে সঙ্গম করতে চায় বা সঙ্গমের জন্য প্রতিযোগিতা করে। একটা স্ত্রী পাওয়ার জন্য পুরুষে পুরুষে এই দ্বন্দ্বে সাধারণ শক্তিশালী পুরুষেরাই জয়লাভ করে। একে ইন্ট্রাসেক্সুয়াল সিলেকশন বা অন্তঃলিঙ্গীয় নির্বাচন বলা হয়।
যখন একই প্রজাতির দুটি পুরুষ একটি মহিলার সাথে সঙ্গম করার সুযোগের জন্য প্রতিযোগিতা করে। লিঙ্গগত দিক থেকে দ্বিরূপ বৈশিষ্ট্য, আকার, লিঙ্গ অনুপাত, সামাজিক পরিস্থিতি, সবই পুরুষ-পুরুষ প্রতিযোগিতার প্রভাবে পুরুষের প্রজনন সাফল্য এবং নারীর সঙ্গী পছন্দের ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখতে পারে। বৃহত্তর পুরুষরা পুরুষ-পুরুষ দ্বন্দ্বে জয়লাভ করে। সব প্রজাতিতেই ইন্ট্রাসেক্সুয়াল সিলেকশন দেখা যায়। যার শক্তি বেশি, সে ই টিকে যায়। বিভিন্ন প্রাণীদের ক্ষেত্রে বিভিন্ন অঙ্গ, যেগুলো প্রতিযোগিতার সময় তাদের শক্তি প্রদর্শন করে যেমন-হরিণের শিং, Elephant Seal দের bulk বা ,Horned beetle নামের পোকাদের মুখের সামনে শিং এর মতো অংশ, এগুলো ইন্ট্রাসেক্সুয়াল সিলেকশনের উদাহরণ।
পাখিদের মধ্যে ইন্ট্রাসেক্সুয়াল সিলেকশন
পাখিদের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের সঙ্গমের আচরণ লক্ষ্য করা যায়। এর মধ্যে রয়েছে আন্তঃকামী নির্বাচন (স্ত্রী পছন্দ করে নির্বাচন করে) এবং ইন্ট্রাসেক্সুয়াল সিলেকশন , যেখানে একাধিক পুরুষেরা স্ত্রী সঙ্গীর সাথে সঙ্গমের জন্য একে অপরের সাথে প্রতিযোগিতা করে। উদাহরণস্বরূপ dunnock নামের একটা ইউরোপিয়ান পাখিকে ধরা যায়। পুরুষরা সঙ্গমের আগে স্ত্রীদের পরিপাকতন্ত্রের শেষের একটা বিশেষ ছিদ্র যেটা একইসাথে মলত্যাগ ও জনন-সম্বন্ধীয় নিঃসরণের কাজ করে সেই অংশটাতে চঞ্চু দ্বারা খোচাতে থাকে, পরবর্তীতে খোচানোর ফলে স্ত্রী নিজের cloaca কে প্রসারিত করে, প্রসারিত করার ফলে পূর্ববর্তী যে পুরুষ তার সাথে সঙ্গম করেছিলো, তার বীর্য সেখান থেকে বের হয়ে যায়, তারপর বর্তমান পুরুষটা তার সাথে সঙ্গম শুরু করে। আবার এক ধরনের প্যারাসাইট আছে, যাদের পুরুষরা সঙ্গমের পর স্ত্রীদের জননেন্দ্রিয়কে(genitalia) বিশেষভাবে বন্ধ করে দেয়, যেটা শুধু সে ই খুলতে পারে। ফলে অন্য পুরুষেরা তার সাথে সঙ্গমে লিপ্ত হতে পারেনা যার ফলে অন্য পুরুষের প্রজনন করার সম্ভাবনা কমে যায়।
এভাবেই ইন্ট্রাসেক্সুয়াল সিলেকশনের মাধ্যমে ভিন্ন ভিন্ন প্রজাতির পুরুষদের মধ্যে বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য (দৈহিক শক্তি, শিং, bulk) টিকে থাকে।
রেফারেন্সঃ
1. Weir, Laura K. (2012-11-22). “Male–male competition and alternative male mating tactics influence female behavior and fertility in Japanese medaka (Oryzias latipes)”. Behavioral Ecology and Sociobiology. 67 (2): 193-203. https://link.springer.com/article/10.1007/s00265-012-1438-9