সিমপ্যাট্রিক স্পেসিয়েশান
বিবর্তনবাদ
সূচনা
গ্রীক ভাষায় Sym মানে একই, আর Patri মানে পিতৃভূমি, পিতার আর আদিপুরুষের বসবাসের স্থান। সিম্প্যাট্রিক স্পিসিয়েশনে একই ভৌগলিক এলাকার মাঝে থেকে একটা প্রজাতি থেকে আরেকটা প্রজাতির উৎপত্তি হয়। এদের মাঝে কোনো ভৌগলিক বাধা থাকে না বরং এদের মধ্যে রিপ্রোডাক্টিভ আইসোলেশন গড়ে ওঠে হেটেরোজাইগাসদের বিপক্ষে সিলেকশন বা সেক্সুয়াল সিলেকশনের কারণে। উদাহরণস্বরুপ, মাঝারি গ্রাউন্ড ফিঞ্চ ( জিওস্পিজা ফোর্টিস ) সান্তা ক্রুজ দ্বীপের এই ফিঞ্চের জনসংখ্যার মধ্যে জিন পুলের ভিন্নতা দেখা যায়। কারণ এই ফিঞ্চের চঞ্চু বা ঠোটের আকারের উপর স্ত্রী ফিঞ্চ রা এদের নির্বাচন করে। নির্দিষ্ট কিছু নারীরা বিশেষ কিছু পুরুষদের পছন্দ বেশি করে যার ফলে তখন ধীরে ধীরে সেই নারী-পুরুষরা মূল জনসংখ্যার মাঝে থেকেও আলাদা হয়ে যায় এবং দলের এক অংশের সাথে অন্য অংশের জিন ফ্লো কম হতে থাকে ফলাফলস্বরুপ তাদের জিনপুলের ভিন্নতা দেখা যায়। (১)
প্যারাপেট্রিক স্পেসিয়েশানঃ
এখানে একটা প্রজাতির দুইটি দলের মধ্যে রিপ্রোডাক্টিভ আইসলেশন গড়ে ওঠে ঠিকই, তবে তাও তাদের মধ্যে সীমিত মাত্রায় জিন ফ্লো চলতে থাকে।এটা মূলত হয় আংশিক ভৌগলিক বাধা তৈরির কারণে, ফলে তারা অধিকাংশ সময় আলাদা থাকলেও মাঝে মাঝে প্রজনন ঘটাতে পারে। তবে জিন ফ্লো এর মাত্রা কম হয় বলে দুইটি দলের ওপর ভিন্ন দুইটি সিলেকশন প্রেশারের প্রভাব কাটিয়ে উঠতে পারেনা। ধীরে ধীরে ডাইভার্জেন্ট ইভোলুশন হয়, দুইটি ভিন্ন প্রজাতি গড়ে ওঠে। এর মাঝে আবার হাইব্রিডদের জন্ম হতে পারে, যেহেতু ভৌগলিক বাধাটা আংশিক, তবে অধিকাংশ সময়ই এই হাইব্রিডদের ফিটনেস কম হয়, সার্ভাইভাল রেট কম হয়, ফলে বিলুপ্ত হয়ে যায়। ওদিকে ধীরে ধীরে রিপ্রোডাক্টিভ আইসোলেশন চরম আকার ধারণ করতে থাকে, জিন ফ্লো বন্ধ হতে থাকে, আর একসময় নতুন দুইটি প্রজাতি তৈরি হয়।
প্যারাপেট্রিক স্পেসিয়েশান এর তিনটি ফর্ম বিদ্যমান। যথা- ১.clinal ২. stepping-stone ও ৩. stasipatric speciation
১.Clinal– প্যারাপেট্রিকের সাধারণ বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী প্রজাতির জনসংখ্যা বিভিন্নভাবে একটা ভৌগলিক সীমানার মাঝে বিস্তৃত থাকে।। যখন এই জনসংখ্যায় কোনো পরিবর্তন আসে, তখন পপুলেশনের প্রাণীরা তাদের পারিপার্শ্বিক পরিবেশের সাথে মানিয়ে নিতে নতুন নতুন বৈশিষ্ট্য অর্জন করে। ফলে একই প্রজাতির মাঝে নির্দিষ্ট কোনো একটা পরিবেশের প্রতি প্রতিক্রিয়ায় একটা ধারাবাহিকতা দেখা যায় এর মধ্যে আবার তাদের মাঝে জিন ফ্লো চলে, তবে কম। একেই ক্লাইন বলে এবং এরুপ প্রজাত্যায়ন কে ক্লাইনাল বলে।
২.stapping-stone– প্যারাপেট্রিক এর এই ফর্মে একই প্রজাতির নির্দিষ্ট একাধিক বিচ্ছিন্ন পপুলেশন থাকলেও তাদের মাঝে ক্লাইনের মতো ধারাবাহিক সম্পর্ক থাকেনা, জিন ফ্লো এর ধারাবাহিকতা ও রক্ষা হয়না এই ফর্মে ছোট পপুলেশনে চেইঞ্জ তাড়াতাড়ি হয় অর্থাৎ ছোট পপুলেশনে ফিক্সেশন দ্রুত হয়ে যায়।
৩.stasipatric speciation: এই ফর্মের প্রজাতির পপুলেশনে হেটেরোজাইগাসদের বিরুদ্ধে সিলেকশন অর্থাৎ ডিসরাপ্টিভ সিলেকশন দেখা যায়, হোমোজাইগাস ডমিনেন্ট আর হোমোজাইগাস রিসেসিভরা টিকে যায়। ফলে এই দুইটি ক্রোমোজোমের গঠনের দিকে ডাইভার্জেন্ট ইভোলুশন ঘটে।
মাইক্রো বিবর্তন এর মেকানিজম এবং এর সার্বিক আলোচনা এটুকুই।
রেফারেন্সঃ
https://www.ncbi.nlm.nih.gov/pmc/articles/PMC2493575/