ফাউন্ডার ইফেক্ট
বিবর্তনবাদ
সূচনা
জেনেটিক ড্রিফট কি তা আমরা জানি। এ নিয়ে পূর্বে বিশদ আলাপ আলোচনা হয়েছে। পপুলেশন বটলনেক যেমন এক ধরনের জেনেটিক ড্রিফট ঠিক তেমনই আরেক ধরনের জেনেটিক ড্রিফট আছে যাকে বলে ফাউন্ডার ইফেক্ট। যখন কোনো পপুলেশন থেকে একদল লোক,যাদের এলিল ফ্রিকোয়েন্সি ওই টোটাল জনসংখ্যার এলিল ফ্রিকোয়েন্সিকে রিপ্রেজেন্ট করেনা, তারা যখন মাইগ্রেট করে অন্য স্থানে চলে যায় ও সম্পূর্ণ নতুন জনসংখ্যার উৎপত্তি ঘটায়, তখন নতুন জনসংখ্যার এলিল ফ্রিকোয়েন্সি আগেরটা থেকে সম্পূর্ণ আলাদা হতে পারে,আর উভয় জনসংখ্যারই জেনেটিক ভ্যারিয়েশন বা জিন-বৈচিত্র কমে যায়, একেই বলে ফাউন্ডার ইফেক্ট।
হাইপোথেটিক্যাল পপুলেশন
উদাহরণস্বরূপ, ধরে নিলাম কোনো পপুলেশন এ প্রায় ৫০০ লোক বাস করে। কোনো এক সময়ে সেখান থেকে ২০ জন লোকের একটা রোগ রয়েছে। ধরে নিচ্ছি রোগটার নাম ” ভালো লাগে তাই ভালোবাসি” সেক্ষেত্রে বাকি ৪৬০ জনের এলিল ফ্রিকোয়েন্সি আর ওই ২০ জনের এলিল ফ্রিকোয়েন্সি কিন্তু সেইম না। সেক্ষেত্রে ধরলাম ওই ২০ জন দূরবর্তী কোন এক দ্বীপে ঘুরতে গিয়ে আটকা পড়লো। পরবর্তীতে আর ফিরে আসতে না পেরে সেখানেই বসতি স্থাপন করে বসবাস করতে লাগলো এবং একসময় তাদের থেকেই প্রজন্মান্তরে একটি নতুন জনগোষ্ঠী গড়ে উঠলো যাদের প্রত্যেকের “ভালো লাগে তাই ভালোবাসি ” রোগ টা রয়েছে। যখন ওই ২০ জন ৪৬০ জনের সাথে বসবাস করতো তখন ২০ জনের এই বৈচিত্র্যময় বৈশিষ্ট্য টা ছিলো কিন্তু ওই পপুলেশন ছেড়ে ভিন্ন এক পপুলেশন ক্রিয়েট করায় ২০ জনের নিজস্ব জনগোষ্ঠীতে ” ভালো লাগে তাই ভালোবাসি” রোগ টা থাকলেও আগের পপুলেশনে কিন্তু এই ট্রেইট না আর নেই। সুতরাং কি হলো? জিন ভ্যারিয়েশন আগের পপুলেশনে কমে গেল, এটাই ফাউন্ডার ইফেক্ট। মজার বিষয় হলো ডারউইনের পর্যবেক্ষণকৃত কচ্ছপ এবং গ্যালাপাগোস এএ ফিঞ্চ পাখির ক্ষেত্রেও এই ফাউন্ডার ইফেক্ট হয়েছিলো।
রেফারেন্সঃ
2. Lee, C. E. (2002). Evolutionary genetics of invasive species. Trends in ecology & evolution, 17(8), 386-391.