তাহাজ্জুদ নামাজের ফজিলত
তাহাজ্জুদ নামাজের ফজিলত
আরবিতে ‘তাহাজ্জুদ’ শব্দের আভিধানিক অর্থ হলো রাত্রি জাগরণ বা নিদ্রা ত্যাগ করে রাতে নামাজে মশগুল থাকা। রাত দ্বিপ্রহরের পর ঘুম থেকে উঠে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের আশায় যে নামাজ আদায় করা তা-ই তাহাজ্জুদ নামাজ বা সালাতুত তাহাজ্জুদ। কিয়াম শব্দের অর্থ দাঁড়ানো বা দণ্ডায়মান হওয়া। আর দণ্ডায়মান হওয়া নামাজের আরকানের একটি। কিয়ামুল লাইল বা তাহাজ্জুদ নামাজ বলতে- গভীর রজনীতে দাঁড়িয়ে যে নামাজ আদায় করা হয়, তা বোঝানো হয়েছে। এই নামাজের ব্যাপারে পবিত্র কুরআনে সুরা মুয্যাম্মিলে বর্ণিত হয়েছে,
ওহে চাদরে আবৃত (ব্যক্তি)! রাতে নামাযে দাঁড়াও তবে (রাতের) কিছু অংশ বাদে। [1]সূরা আল মুযযাম্মিল; ৭৩ঃ১-২
পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তা’আলা মুত্তাকিদের গুনাবলি বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন,
তারা রাতের সামান্য অংশই অতিবাহিত করত নিদ্রায়, আর তারা বাতের শেষ প্রহরে ক্ষমা প্রার্থনা করত। [2]সূরা আযযারিয়াত; ১৭-১৮
সুতরাং, রাতে বেশি না ঘুমিয়ে নামাজে মশগুল থাকে আল্লাহর কাছে ক্ষময়া চাওয়া মুত্তাকিদের গুণাবলি।
মর্যাদা ও ফজিলতের দিক থেকে ফরজ নামাজের পরই তাহাজ্জুদের অবস্থান। এই নামায, মুমিনের মর্যাদার সিঁড়ি। জান্নাতের যাওয়ার অন্যতম উপায়, সফলতার চাবিকাঠি। আল্লাহর একান্ত ও প্রিয় হওয়ার অন্যতম প্রধান মাধ্যম। রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কখনও তাহাজ্জুদ ছাড়েননি। ছুটে গেলে কাযা করতেন। নিজে আদায় করতেন এবং সাহাবায়ে কেরামকেও অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে উৎসাহিত করতেন।
হারূন ইবনু মা’রূফ ও হারূন ইবনু সাঈদ আল আইলী (রহঃ) ……আয়িশাহ্ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন সালাত আদায় করতেন তখন এত বেশি দাঁড়িয়ে থাকতেন যে এতে তার দু’পা ফুলে যেত। এ দেখে আয়িশাহ্ (রাযিঃ) বললেন, হে আল্লাহর রসূল! আপনি এরূপ করছেন অথচ আপনার পূর্বাপর যাবতীয় ত্রুটি-বিচ্যুতি মাফ করে দেয়া হয়েছে। এ কথা শুনে তিনি বললেন, হে ’আয়িশাহ আমি কি শুকরগুজার বান্দা হব না?[3]সহীহ মুসলিম (হাদীস একাডেমী)| হাদিস:৭০১৮ [২৮২০] | Sahih Muslim (Hadith Academy), Hadith No. 7018 [2820] (hadithbd.com)
তাহাজ্জুদ নামাজ জান্নাতী ব্যক্তিদের বৈশিষ্ঠ
পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তা’আলা বলেন,
নিশ্চয় মুত্তাকীরা থাকবে জান্নাতসমূহে ও ঝর্ণাধারায়, তাদের রব তাদের যা দিবেন তা তারা খুশীতে গ্রহণকারী হবে। ইতঃপূর্বে এরাই ছিল সৎকর্মশীল। রাতের সামান্য অংশই এরা ঘুমিয়ে কাটাতো। আর রাতের শেষ প্রহরে এরা ক্ষমা চাওয়ায় রত থাকত। [4]সূরা আয-যারিয়াতঃ ৫১ঃ১৫-১৮
তাহাজ্জুদ নামাজের মাধ্যমে পাপ মোচন হয়
ইসহাক ইবন মানসূর (রহঃ) …… বিলাল রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের রাতের সালাত (তাহাজ্জুদ) প্রতিষ্ঠা করা উচিত। কেননা, এ হল তোমাদের পূর্ববর্তী নেককারদের অবলম্বিত রীতি। রাতের সালাত আল্লাহর নৈকট্যলাভ ও গুনাহ থেকে বাঁচার উপায়; মন্দ কাজের কাফফারা এবং শারীরিক রোগের প্রতিরোধক।[5]সুনান আত তিরমিজী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)| হাদিস:৩৫৪৯ | Sunan at-Tirmidhi (Islamic foundation), Hadith No. 3549 (hadithbd.com)
তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ম – Faith and Theology (faith-and-theology.com)
References
↑1 | সূরা আল মুযযাম্মিল; ৭৩ঃ১-২ |
---|---|
↑2 | সূরা আযযারিয়াত; ১৭-১৮ |
↑3 | সহীহ মুসলিম (হাদীস একাডেমী)| হাদিস:৭০১৮ [২৮২০] | Sahih Muslim (Hadith Academy), Hadith No. 7018 [2820] (hadithbd.com) |
↑4 | সূরা আয-যারিয়াতঃ ৫১ঃ১৫-১৮ |
↑5 | সুনান আত তিরমিজী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)| হাদিস:৩৫৪৯ | Sunan at-Tirmidhi (Islamic foundation), Hadith No. 3549 (hadithbd.com) |